বরষা উৎসব


rain dropsপৃথিবির নানা দেশে জাকজমক করে পালন করা হয় বৃষ্টি উৎসব। এমনি একটা দেশ ইরান।এই উৎসব পালনের পেছনে আছে একটা ইতিহাস, হয়তো কাল্পনিক!

ইরানের তুর শহরে বাস করত এক রাজা। তার নাম আফরাসিয়াব। এই রাজার শাসনামলে প্রায় আট বছর ‘তুর’ শহরে কোনো বৃষ্টি ছিল না। তুরের সব  ঞ্জাণী  আর জ্যোতিষীদের ডেকে রাজা একদিন জানতে চাইলেন, ‘আচ্ছা, আমার এই শহরে বৃষ্টি নেই কেন? কারণ জানা থাকলে নির্ভয়ে আমাকে জানাতে পারো।’

প্রাণের ভয়ে অনেকেই সেদিন সত্য কথা বলেনি। কিন্তু জু তাহ্‌মাস্‌প রাজার শাস্তিকে পরোয়া না করে বললেন, ‘রাজা, আপনি ধীরে ধীরে অবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন। মহামতি ফারিদুন আপনাকে তুর্কিস্তান শাসন করতে বলেছেন। কিন্তু আপনি তার কথা না শুনে তুর্কিস্তানের সাথে ইরানও শাসন করছেন। এতে মহামতি ফারিদুন নাখোশ হয়েছেন। এ জন্যই এই শহরে কোনো বৃষ্টি নেই।’

রাজা আফরাসিয়াব জানতে চাইলেন, ‘আপনার কথা যে সত্যি তা নিশ্চিত হব কিভাবে? জু তাহ্‌মাস্‌প বললেন, ‘আমি এখান থেকে একটা তীর ছুড়ে দেব। তীরটি যেখানে গিয়ে পড়বে ওটাই হবে আপনার রাজ্যের সীমানা।’ প্রস্তাবটা রাজার পছন্দ হল। দু’জন মিলে একটা চুক্তিতে এলেন। রাজা বললেন, ‘আপনার ছুড়ে দেয়া তীর যেখানে পড়বে ওই পর্যন্তই আমার রাজ্যের সীমানা, এটা আমি মেনে নেব এবং ইরান ছেড়ে চলে যাব। তারপরেও আমি চাই বৃষ্টি হোক’
তীর নিক্ষেপের দিন চলে এলো। সৃষ্টিকর্তার নামে জু ইরান থেকে যে তীর নিক্ষেপ করলেন দেবতা অহুরামাজ্‌দ-এর আদেশে সেই তীর গিয়ে পড়ল তুরানে। চুক্তি অনুযায়ী রাজা আফরাসিয়াব ইরান ছেড়ে তুরানে চলে গেলেন। আর কী অবাক কাণ্ড সেই মুহূর্তেই ঝর ঝর বৃষ্টি নেমে এলো। আর এই ঘটনার মধ্য দিয়েই রাজা আফরাসিয়াব সাক্ষী হয়ে রইলেন যে,  তার কারণেই এত বছর এই এলাকায় বৃষ্টি হয়নি।

অনেক বছর আগে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাকে ইরানিরা আজও উৎসব হিসেবে পালন করে যাচ্ছে।

Leave a comment